Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Friday, May 13, 2016

ইস্টবেঙ্গল ছাড়লেন রন্টি । আজকাল

শেষ পর্যন্ত লাল–হলুদ তাঁবু ছেড়েই যাচ্ছেন রন্টি মার্টিন। বৃহস্পতিবার বাইপাসের ধারে নিজের ফ্ল্যাটে বসে প্রচারমাধ্যমের কাছে সাফ জানালেন নাইজেরীয় স্ট্রাইকার, ‘লাল–‌হলুদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক শেষ। দু’‌বছর তো খেললাম ইস্টবেঙ্গলে। এই পরিবেশে হাঁপিয়ে উঠেছি। আমি এখন সামনের দিকে তাকাতে চাই।
নতুন করে নিজেকে মেলে ধরতে চাই।’ এই সিদ্ধান্তের পেছনে অভিমান, না ক্ষোভ, সেটা পরিষ্কার করে কিছুই বললেন না রন্টি। বরং তাঁর কথা শুনে বারবার এটাই মনে হল, ইস্টবেঙ্গল তাঁর সঙ্গে চুক্তি নবীকরণ করতে না পারে বুঝেই আগাম লাল–‌ হলুদে খেলার ভাবনা থেকে সরে দাঁড়ালেন। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে দুবছরের চুক্তির এটাই ছিল শেষ বছর। মর্গানকে কোচ করার ভাবনার পর থেকেই নতুন মরশুমে দলের খোলনলচে পাল্টানোর কথা বলতে শুরু করেন কর্তারা। একটা কানাঘুষো চলছিলই রন্টিকে আর রাখা হবে না। কারণটা অবশ্যই রন্টির পারফরমেন্স নয়। পরপর দুবছর আই লিগে লাল–‌হলুদ জার্সিতে রন্টি সর্বোচ্চ গোলদাতা। এবার আবার আই লিগের সেরা স্ট্রাইকারের স্বীকৃতিও মিলেছে। বরং ভেতরের খবর, রন্টির বিরাট আর্থিক দাবি কোনও সময়ই মানতে পারেননি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। আর রন্টিও কম টাকায় ইস্টবেঙ্গলে থেকে যেতে রাজি হননি। তাছাড়া রন্টি কত টিমম্যান তা নিয়েও শিবিরে গুঞ্জন ছিল। ইস্টবেঙ্গল তাঁর সঙ্গে নতুন মরশুমে চুক্তি নিয়ে কথা বলতে আগ্রহ দেখায়নি। আসলে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা এবার শুরু থেকেই ধীরে চলো নীতি নেন বাজেটের কথা ভেবে, মোহনবাগান মডেল সামনে রেখে। এখন একটা সাদামাটা দল গড়ে আই এস এলের পর চূড়ান্ত দল গঠন আই লিগের জন্য। যা রন্টি–‌সহ অনেক ফুটবলারেরই অপছন্দ। সব মিলিয়ে তাই বিচ্ছেদটা ঘটেই গেল। রন্টির কাছে প্রশ্ন ছিল,  ইস্টবেঙ্গল কর্তারা বা নতুন কোচ মর্গান কি বলেছিলেন, আপনাকে চান না? রন্টির জবাব, ‘না, সে জায়গায় ব্যাপারটা পৌঁছতে দিতেই চাইনি। ক্লাবকর্তা সন্তোষ ভট্টাচার্যর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল। যখন আগের কোচ বিশ্বজিতের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল, তখন সন্তোষ সবসময় আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। এবার মরশুম শেষে সন্তোষই বলেন, টিম তৈরি করেছেন মর্গান। মনে হল, আমার ব্যাপারে ক্লাবের আগ্রহ কম। আমি কোনও দিনই নিজের হয়ে কারও কাছে তদ্বির করিনি। মর্গানের সঙ্গে তাই কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না। আমি ডেম্পো থেকে কলকাতায় এসেছিলাম নতুন চ্যালেঞ্জ নেব বলে। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে আই লিগ জিততে না পারায় নিঃসন্দেহে হতাশ, কিন্তু আমি নিজেকে ব্যর্থ ভাবছি না। সবসময় সেরাটা দিতে চেষ্টা করেছি পাশে কী ঘটছে মাথায় না রেখে।’ আই লিগ না জেতার কারণ কী? রন্টির ব্যাখ্যা, ‘ ফুটবলারদের মধ্যে ইগোর লড়াই। সবাই তো আর মাঠে খেলার সুযোগ পায় না একসঙ্গে। কাউকে কাউকে তো বসে থাকতে হয় সুযোগের জন্য। দলের সাফল্যের জন্য তাদেরও সমানভাবে মানসিক সাপোর্ট দেওয়া জরুরি, যারা মাঠে নেমে খেলছে। এটাই মিসিং ছিল ইস্টবেঙ্গলে। আগের কোচও সেটাকে সামাল দিতে পারেননি। একটা দল না হয়ে উঠতে পারলে সাফল্য আসে না। তাই বারবার সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া হয়েছে। আন্তরিকতার অভাবটা ভাল লাগেনি। তাই ক্লাব ছাড়লাম। যেখানে খেলে আনন্দ পাব, সেখানেই যাব।’ শোনা যাচ্ছে আপনি মোহনবাগান বা ডেম্পোতে যোগ দিতে পারেন? রন্টির প্রতিক্রিয়া, ‘অফার অনেক ক্লাবের আছে। মোহনবাগান বা অন্য কোন ক্লাব সেটা এখন বলার সময় আসেনি। আর ডেম্পো আগে প্রথম ডিভিশনে উঠুক। আগামী একমাস পুরো বিশ্রাম। পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাব। তারপর কে বলতে পারে, থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়ার কোনও ক্লাবে খেলব কিনা।’ সে কি আই এস এলের কোন ক্লাবের অফার নেই? রন্টির উত্তর, ‘নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফ সি–‌র অফার আছে। তবে এখনও চূড়ান্ত কথা দিইনি। সব ঠিকঠাক চললে ওখানে খেলতে পারি।’ সবসময় গেম মেকার না থাকার কথা বলে আপশোস করেছেন। সনি নর্ডির সঙ্গে জুটি বাঁধার কথা বলেছেন। নতুন মরশুমে দুজনের যুগলবন্দী কি দেখা যাবে? রন্টির মন্তব্য, ‘সনি দুর্দান্ত ফুটবলার, গেম মেকার। ওকে পাশে পেলে তো গোলের বন্যা বইয়ে দেব।’ তবে কি মোহনবাগানে যাওয়ার দরজাটা খোলা রেখে গেলেন রন্টি?‌ নাইজেরীয় স্ট্রাইকারের সিদ্ধান্তে খানিকটা অবাক মর্গান। বলেন, ‘রন্টি, ডংদের নিয়ে তো এখনও কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি। এরপরও যদি রন্টি নতুন ক্লাবে যেতে চায় সেটা ওর ব্যাপার। শুভেচ্ছা রইল।‌’‌‌‌‌

No comments:

Post a Comment