Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Saturday, May 14, 2016

পাহাড়ে আটকেও ফাইনালে মোহনবাগান | সৌমিত্র কুমার রায় - আজকাল

লাজং এফ সি–০              মোহনবাগান–০
আই লিগে পাহাড়ে লাজংয়ের সঙ্গে ড্র করেই মোহনবাগান খেতাব দৌড় থেকে কার্যত ছিটকে গিয়েছিল। তার ৩৯ দিন পর ফেড কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে সেই পাহাড়ে আটকে গিয়েই ফেড কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল বাগান। শনিবার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে লাজং–মোহনবাগান ম্যাচ গোলশূন্য অমীমাংসিত রইল।

বারাসতে ৫–০ জিতে গঙ্গাপাড়ের ক্লাব ফাইনালের টিকিট কার্যত নিশ্চত করে রেখেছিল। তবে ফাইনালের আগে সঞ্জয় ম্যাচটা জিততে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন এরকম হল?
হোমওয়ার্কটা ভালই করেছেন শিলং কোচ। বারাসতে ০–৫ হারের পর থেকে। কেন? লাজং ফুটবলাররা বাগানের ফরোয়ার্ডে অন্যতম দুই অস্ত্র জেজে, গ্লেনের বলের সাপ্লাই লাইন কেটে দিয়েছিলেন। যার ফলে ম্যাচের প্রথমার্ধে অন্তত বাগানের একটাও পজিটিভ অ্যাটাক িছল না।
কিন্তু বিপক্ষ দল প্রথমার্ধে মাঝে মধ্যেই আক্রমণ শানিয়েছে। কাঁপুনি ধরিয়েছে সবুজ–মেরুন দুর্গে। ম্যাচের ২৭ মিনিটেই এগিয়ে যেত পারত পাহাড়ি দলটা। বাগান কিপার দেবজিতের সৌজন্যে অল্পের জন্য রক্ষা পায়। ম্যাচের নায়ক লাজংয়ের স্যামুয়েল লালমুয়ানপুইয়ার শট দুরন্ত ফিস্ট করে বাঁচান উত্তপাড়ার গোলরক্ষক। তার মিনিট তিনেক পরেই স্যামুয়েলের আরও একটা শট বাগানের বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ৬ ও ২৩ মিনিটে আরও দুটো সুযোগ চলে এসেছিল বিপক্ষের চিঙ্গালসানার কাছে। ৬২ মিনিটে একটি বল দেবজিতের হাত ফসকে পড়লে, আরও একবার বিপদ তৈরি হয়েছিল মোহন–রক্ষণে। 
উল্টোদিকে গুটিয়ে ছিল মোহনবাগান। দুটো উইং ধরে সঞ্জয়ের দলের আক্রমণকে ভোঁতা করে দিয়েছিল পাহাড়ি দলটা। সনির পায়ে বল গেলেই প্রতিপক্ষের দু–তিনজন ফুটবলার তাড়া করছিলেন। মোহনবাগানের মাঝমাঠে লেনি রডরিগজ প্রথমার্ধটা ম্রিয়মাণ হয়ে রইলেন। দু–একটা পাস বাড়ানো ছাড়া খুঁজেই পাওয়া যায়নি এই গোয়ানিজকে। নিট ফল মাঝমাঠের যুদ্ধের রাশ অনেকটাই নিজেদের হাতে রেখেছিল সিংটো–ব্রিগেড।
বল দখলের লড়াইয়ে নর্ডিদের টেক্কা দিয়ে যাচ্ছিলেন পেন, ফ্যাবিওরা। কাৎসুমি সারা ম্যাচ দৌড়ে বেড়ালেন। তা–‌ও গোলমুখ কিছুতেই খুলছিল না। ছন্দ খঁুজে পাচ্ছিলেন না জেজে, সনিরা। সেইসঙ্গে শনিবারের ম্যাচে মোহনবাগানের মাঝমাঠ ও অ্যাটাকিং লাইনের মধ্যে কয়েক মাইল দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। বারাসতে ৫–০ গোলে জিতে থাকায় বাগানের চাপ অনেকটাই কম ছিল। বরং লাজংয়ের জেতার তাগিদ বেশি ছিল। সঙ্গে দাপটও। কাৎসুমিরা যেখানে নিজেদের মধ্যে দু–তিনটের বেশি পাস খেলতে পারছিলেন না, লাজংয়ের ফুটবলাররা ছোট ছোট পাসে আক্রমণের দরজা খুলে ফেলছিলেন। ৭০ মিনিটে ফ্যাবিও পেনার শট পোস্টে না লাগলে পাহাড়ি দলটা এগিয়ে যেতেই পারত। সঞ্জয় চেয়েছিলেন, আক্রমণের পাল্টা আক্রমণে বাজিমাত করতে। তঁার ছেলেরা সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিল বলাই যায়। দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে দিনের সহজতম সুযোগ নষ্ট করেন জেজে। এটা ছাড়া শনিবারের ম্যাচে মোহনবাগানের কাছে তেমন কোনও গোলের সুযোগ তৈরি হয়নি। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না দেখে ৮৩ ও ৮৭ মিনিটে গ্লেন ও নর্ডিকে তুলে নেন সঞ্জয়। ফাইনালের কথা মাথায় রেখে অবশ্যই। যাতে শেষ মুহূর্তে কোনও চোট–আঘাত না লেগে যায়।
সঞ্জয় এদিন ফাইনালের ‘ড্রেস রিহার্সাল’ সেরে নিলেন। একটা করে হলুদ কার্ড থাকায় ডিফেন্ডার কিংশুক দেবনাথ ও মিডফিল্ডার প্রণয় হালদারকে নামাননি বাগান কোচ। তবে, ‘ড্রেস রিহার্সল’–এর শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস কি ফেলতে পারলেন সঞ্জয়?
মোহনবাগান:‌  দেবজিৎ, প্রীতম, রাজু, লুসিয়ানো, ধনচন্দ্র, কাৎসুমি, বিক্রমজিৎ (শৌভিক চক্রবর্তী), লেনি, সনি (তীর্থঙ্কর), জেজে, গ্লেন (আজহার)‌

No comments:

Post a Comment