Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Sunday, May 8, 2016

ফাইনালের পথে মোহনবাগান | আজকাল

মোহনবাগান–৫ (জেজে–হ্যাটট্রিক, বিক্রমজিৎ, আজহার)                 লাজং এফ সি–০
ফের জেজে–ম্যাজিক। তাতে যা হওয়ার তা–ই হল। পাহাড় ভ্যানিশ করে ফেড কাপের ফাইনালের ভিসা কার্যত নিশ্চিত করে নিল মোহনবাগান।
ম্যাচ শেষ হতেই গ্যালারির দিকে হাত নাড়তে নাড়তে এগিয়ে গেলেন সনি, জেজে–সহ গোটা দল। গ্যালারি তখন উত্তাল। পাগলপারা আনন্দে হাত–পা ছুঁড়ে নাচছেন, গাইছেন সবুজ–মেরুন সমর্থকরা। হবে না–ই বা কেন!‌ ইস্টবেঙ্গল শেষ এক সপ্তাহের ব্যবধানে যে দলকে তিনবার হারাতে পারেনি, বাগান–ঝড়ের সামনে পড়ে সেই লাজং উড়ে গেল খড়কুটোর মতো।

ওয়ার্ম–আপের সময় গ্যালারি থেকে সনি, কাৎসুমি, জেজে, দেবজিৎদের নামে জয়ধ্বনি উঠছিল। রবি–সন্ধের বারাসতের গ্যালারিতে সমর্থকরা স্মার্ট ফোনের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়েছিলেন। ম্যাচ শুরুর পর সমর্থকদের সেই ফ্ল্যাশ গোলের আলো হয়ে প্রথম ছড়িয়ে পড়ল জেজে–র সৌজন্যে। ম্যাচের ৪০ মিনিটের মাথায়। সেই শুরু। তার পর তেল খাওয়া মেশিনের মতো দৌড়ে গেল সঞ্জয়ের দল।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই কার্যত জয় নিশ্চিত করে ফেলেছিল মোহনবাগান। ২–০ এগিয়ে থেকে। শেষ পর্যন্ত ৫–০ গোলে পাহাড় ডিঙিয়ে ফাইনালের রাস্তা কার্যত মসৃণ করে ফেলল বাগান।
সালগাঁওকার ম্যাচ যদি সনি–ময় হয়ে থাকে, তা হলে এদিনের বারাসত স্টেডিয়াম জেজে–ময় হয়ে রইল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। হ্যাটট্রিক করলেন এই মিজো স্ট্রাইকার। সারা ম্যাচে দুরন্ত খেললেন।
তবে জেজে নায়ক হলেও ব্যান্ডমাস্টার সেই সনি। গোল না পেলেও ম্যােচ নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটা নিখুঁতভাবে সেরে গেলেন। গোল না পেলেও করালেন।
ম্যাচের প্রথম গোলটা জেজে করলেও অবদান অবশ্যই বেশি নর্ডির। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে বিপক্ষের তিনজন ফুটবলারকে মাটি ধরিয়ে গোল লক্ষ্য করে জোরালো শট রাখেন। শিলঙের কিপার বিশাল কাহিত ফিস্ট করতে গেলে বল মাটিতে পড়ে যায়। ততক্ষণে গোলের গন্ধ পেয়ে বক্সের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া জেজে গোল করে যান। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে আরও একটি গোল। গ্লেনের পাস থেকে বক্সের মধ্য থেকে বাঁ পায়ের শটে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন বিক্রমজিৎ।
ম্যাচের শুরুতে কিছুটা হলেও গুটিয়ে ছিল মোহনবাগান। তবে ম্যাচ যত এগিয়েছে, ছন্দে ফিরতে শুরু করেন গ্লেন, জেজে–রা। সনির পায়ে বল গেলেই প্রতিপক্ষের দু–তিনজন ফুটবলার তাড়া করছিলেন। কিন্তু এভাবে কী আর হাইতিয়ান এক্সপ্রেস রোখা যায়! ডজ–ড্রিবল করে অনায়াসে বিপক্ষের রক্ষণের জাল কেটে গোলমুখে পৌঁছে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে রাইটব্যাক প্রীতম কোটাল দুরন্ত। ওভারল্যাপে উঠে বেশ কয়েকটি আক্রমণ তৈরি করতেও সাহায্য করছিলেন উত্তরপাড়ার ফুটবলারটি। লাজংয়ের উইলিয়ামস, পেনদের আক্রমণ এদিন দুর্দান্তভাবে সামাল দিয়ে গেলেন কিংশুক, লুসিয়ানোরা।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল সবুজ–মেরুন। আক্রমণের পর আক্রমণে তখন দিশেহারা অবস্থা শিলঙের। বিপক্ষের পেন ওর্জি মাঝমাঠে অনেকটা জায়গা জুড়ে চমৎকার খেললেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। ৫০ মিনিটে সনি পাস বাড়ান গ্লেনের উদ্দেশে। সেই বলে গোলমুখে শট নেন গ্লেন। গোলের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা জেজে পা ছঁুইয়ে দেন। ৫৫ মিনিটে গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করেন জেজে। বক্সের মধ্যে ফাঁকায় দাঁড়ানো মিজো স্ট্রাইকারের উদ্দেশে বল বাড়ান গ্লেন। তা থেকে গোল করে যান জেজে।
৮৭ মিনিটে সনিকে তুলে শৌভিক চক্রবর্তীকে মাঠে নামান সঞ্জয় সেন। তবে তার আগে যা হওয়ার হয়ে গেছে। তবে বাগান ফুটবলাররা গোলের নেশায় যেন ছুটছিলেন। আজহারউদ্দিন গোল করে লাজংয়ের কফিনে শেষ পেরেকটা পোঁতেন। ১৪ তারিখ শিলঙের মাঠে ফেড কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ কার্যত নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়াল বাগানের কাছে!
মোহনবাগান:‌ দেবজিৎ, প্রীতম, কিংশুক, লুসিয়ানো, ধনচন্দ্র, সনি (শৌভিক), বিক্রমজিৎ, প্রণয় (লেনি), কাৎসুমি, গ্লেন (আজহার), জেজে‌

No comments:

Post a Comment