৫ মার্চ আইজল এফ সি ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে ক্লাব মহলে এখন আক্ষেপ
একাদশ রাউন্ডে মোহন বাগান আট পয়েন্টের অ্যাডভানটেজ পজিশনে ছিল বেঙ্গালুরু এফ সি’র থেকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হল বেঙ্গালুরু এফ সি। এই নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে মোহন বাগানের প্রাক্তন তারকা ব্যারেটো মুম্বই থেকে জানিয়েছেন,‘ আমার মনে হয় আত্মতুষ্টিই এর জন্য দায়ী। অনেকে সনি নর্ডির চোটের কথা বলছেন। কেউ বলছেন কোচ সঞ্জয় সেনের চোটও একটি ফ্যাক্টর। সাইড বেঞ্চে কোচ না থাকলে অসুবিধা হয়। সাইড বেঞ্চ থেকে কোচের চিৎকারের মাধ্যমে ছোট্ট পরামর্শ ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুবিধাই হয়। কিন্তু এই সব মাথায় রেখেই বলছি আত্মতুষ্টিই মোহন বাগানের এই পদস্খলনের জন্য দায়ী।আমি মোহন বাগান- শিলং লাজং ম্যাচটির কিছু অংশ ইউ টিউবে দেখেছি। সবুজ মেরুন জার্সি ধারীরা ওই ম্যাচে দাঁড়াতেই পারি না। শেষ চারটি ম্যাচে মোহন বাগান মাত্র দুটি পয়েন্ট পেয়েছে। এটা দুভার্গের। অথচ মোহন বাগানের দল এবার বেশ ভালো ছিল।
ব্যারেটো আই এম জি আরের আকাদেমির দায়িত্বে এখন মুম্বইয়ে। তবে মুম্বইয়ে থাকলেও তিনি যে মোহন বাগান সম্বন্ধে ভালোই খোঁজ খবর রাখেন তা ওই ওয়েবসাইটে করা মন্তব্য থেকে সহজেই বোঝা যায়। তবে তিনি যা বলেননি তা হল আত্মতুষ্টিতে ভোগা মোহন বাগানের নির্ধারিত ক্রীড়াসূচি অনুসারের গত ৫ মার্চ আইজল এফ সি ম্যাচ খেলতে না যাওয়া। মোহন বাগানের পরবর্তী ম্যাচ ছিল ৯ মার্চ সাউথ চায়নার বিরুদ্ধে হংকংয়ে। ৫ মার্চ আইজলে খেলে পরদিন সকালের ফ্লাইটে কলকাতায় ফেরার ব্যবস্থা করে দিতে চেয়েছিলেন আই লিগের সি ই ও সুনন্দ ধর। শহরে এসে ৬ মার্চ বিশ্রাম নিয়ে ৭ মার্চ হংকংয়ে যেতে পারত মোহন বাগান। কিন্তু সেই পরামর্শ মোহন বাগান টিম ম্যানেজমেন্ট শোনেনি। ঘটনা হল, আইজল এফ সি’কে মোহন বাগান পাত্তাই দেয়নি। তারা জানত ২৬ মার্চ ম্যাচটি খেললে ভারতীয় দলের হয়ে প্রাক বিশ্বকাপে খেলা জেজে- প্রণয়- প্রতীমকে পাবে না। থাকবেন না সনি নর্ডিও। কিন্তু মোহন বাগান অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও আত্মতুষ্টির জন্য চার ফুটবলার ছাড়াই টেবলে একেবারে নীচের দলে থাকা দল আইজল এফ সি’র সঙ্গে খেলতে রাজি হয়ে যান। আর সেটাই শেষ পর্যন্ত কাল হল মোহন বাগানের। কোচ এটা স্বীকার করতে না চাইলেও টিম ম্যানেজমেন্টের একজন বললেন,‘ আমরা তখন ভেবেছিলাম সনি- জেজে না থাকলেও কর্নেল গ্লেনের পাশে বলবন্ত সিংকে পেয়ে যাব। কলকাতার দুই অর্থোপেডিক সাজের্ন বলবন্তকে দেখে সেইরকমই বলেছিলেন। কিন্তু হাঁটুতে ব্যথা লাগছে বলে বলবন্ত তো খেলতেই চাইল না। এটাও শেষ লগ্নে আমাদের বিপক্ষে গিয়েছে।’ আইজল এফ সি কোচ জহর দাসও বলেন,‘ মোহন বাগান ওই ভাবে ৫ মার্চ না খেলে ভাঙা দল নিয়ে প্রাক বিশ্বকাপের ব্রেকের মধ্যে খেলতে চাওয়ায় আমিও অবাক হই। আমাদের ছোট করে দেখছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা- এই কথা টিম মিটিংয়েও বলেছিলাম। ঘটনা হল, ৫ মার্চ আইজল এফ সি ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে এখন ক্লাবের অন্দরেও আক্ষেপ। আসলে রোদ থাকতে থাকতে যেমন ধান শুকিয়ে নিতে হয়, তেমনি দল পিক কন্ডিশনে থাকতে থাকতে ( বিশ্ব ফুটবলে কোনও দলই আট থেকে দশ সপ্তাহর বেশি টপ ফর্মে থাকতে পার না) যে লিগে যথাসম্ভব বেশি পয়েন্ট তুলে রাখতে হয়- এই আপ্ত বাক্যটি সঞ্জয় সেন অ্যান্ড কোম্পানি মার্চের গোড়ায় ভুলে গিয়েছিলেন। কারণ আই লিগে তারা তখন টানা ১০টি ম্যাচে অপরাজিত। ঘটনার পাকচক্রে ওই আইজল এফ সি ম্যাচ থেকেই মোহন বাগানের পদস্খলনের শুরু।
No comments:
Post a Comment